চলতি এশিয়া কাপে আজ নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলতে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। সবার আগে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যাওয়া টাইগারদের প্রতিপক্ষ এখনো পর্যন্ত অপরাজেয় ভারত। কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে আজ টসে জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা। তবে ব্যাট হাতে শুরুটা আজ ভালো হয়নি লাল-সবুজের দলের। ছয় ওভারেই তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া দলের বিপদ আরও বাড়িয়ে দলীয় ৫৯ রানে আউট হন মেহেদী মিরাজও।
এরপর অধিনায়ক সাকিব আল হাসান এবং তাওহীদ হৃদয়ের ১০১ রানের জুটিতে বিপর্যয় সামলে ওঠে বাংলাদেশ। তবে এ দুজনের বিদায়ের পর টাইগাররা ফের চাপে পড়লেও নাসুম আহমেদের ৪৪ রানের ইনিংসে শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৬৫ রানে থেমেছে টাইগাররা। টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের হয়ে আজ ইনিংসের সূচনায় আজ লিটন দাসের সঙ্গী ছিলেন তানজিদ তামিম।
এবারের এশিয়া কাপে গ্রুপ পর্বে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে একদিনের ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল তামিমের। সেদিন ভালো করতে না পারায় পরের ম্যাচগুলোতে আর একাদশে জায়গা হয়নি তার। তবে আজকের ম্যাচ দিয়ে আবার ফিরেছেন তিনি। লিটনের সঙ্গে ভারতীয় বোলারদের বিপক্ষে দেখেশুনেই শুরু করেছিলেন তিনি। শামির প্রথম বলেই চার মেরে ভালো কিছুর ইঙ্গিতই দিয়েছিলেন। পরের ওভারে শার্দুলের ঠাকুরের বলেও দুইটি চার হাঁকান তামিম।
ফলে প্রথম দুই ওভারে টাইগারদের সংগ্রহ দাড়ায় ১৩ রান।কিন্তু তৃতীয় ওভারে শামির প্রথম বলেই বোল্ড হন লিটন। দুই বল খেলে শূন্য রানেই এই টাইগার ওপেনার ফিরলে ক্রিজে তামিমের সঙ্গী হন এনামুল হক বিজয়। লিটন ফেরার পরের ওভারেই শার্দুলের শিকারে পরিণত হন তামিমও। ব্যাটের কোনায় লেগে বল আঘাত করে স্ট্যাম্পে। সাজঘরে ফেরার আগে ১৩ বল খেলে তিন চারে ১২ রান করেছেন তিনি।
এদিকে শুরুতেই দুই ওপেনারকে হারিয়ে চাপে পড়া বাংলাদেশের হাল ধরতে এরপর মাঠে নামেন অধিনায়ক সাকিব। বিউজয়কে নিয়ে বিপর্যয় সামলে ওঠার চেষ্টায় ছিলেন তিনি। তবে দীর্ঘ দিন পর দলে জায়গা পাওয়া বিজয় পারেননি আস্থার প্রতিদান দিতে। শার্দুলের বলে ক্যাচ তুলে দিলে তা সহজেই গ্লাভসবন্দী করেন উইকেটরক্ষক লোকেশ রাহুল। সাজঘরে ফেরার আগে ১১ বলে চার রান করেছেন তিনি।
২৮ রানে তিন উইকেট হারানো দলের হাল ধরতে এরপর মাঠে সাকিবের সঙ্গী হন মেহেদী মিরাজ। দুজন মিলে ৩১ রানের জুটি গড়ে ভালোই এগোচ্ছিলেন। তবে ১৪তম ওভারে অক্ষর প্যাটেলের করা শেষ বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছেন মিরাজ। সাজঘরে ফেরার আগে ২৮ বল খেলে ১ চারে ১৩ রান করেছেন তিনি। এদিকে মিরাজের আউট হওয়ায় চার টপ অর্ডার ব্যাটারকে হারিয়ে বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ।
ক্রিজে তখন সাকিবের সঙ্গী হন তাওহীদ হৃদয়। ম্যাচে ফিরতে এ দুজন মিলে দেখুশুনেই খেলতে শুরু করেন এবং সফলও হয়েছেন। দুজন মিলে জুটি গড়ে স্কোরবোর্ডে যোগ করেছেন ১০১ রান। অধিনায়ক সাকিব নিজের ব্যক্তিগত ফিফটি তুলে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন সেঞ্চুরির দিকে। তবে শতরানের জুটি গড়ার পরই শার্দুলের বলে বোল্ড হয়েছেন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে ৮৫ বল খেলে ৬চার এবং ৩ চারে করেছেন ৮০ রান।
এদিকে সাকিব ফেরার পর ক্রিজে হৃদয়ের সঙ্গী হন শামীম। টুর্নামেন্টে এখনো পর্যন্ত নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি তিনি, ব্যর্থ হয়েছেন আজও। ৫ বল খেলে ১ রান করেই ফিরেছেন তিনি। তবে শামীম ফেরার পর ক্যারিয়ারের নিজের পঞ্চম ফিফটি তুলে নিয়েছেন হৃদয়। ৮১ বল খেলে ৫ চার এবং ২ ছয়ে ৫৪ রান করে ফেরার আগে নাসুম আহমেদের সঙ্গে ৩২ রানের একটি জুটিও গড়েছিলেন তিনি। হৃদয় সাজঘরে ফেরার পর ক্রিজে নাসুমের সঙ্গী হন শেখ মেহেদী। এ দুজন মিলে আজ গড়ে তুলেছেন টাইগারদের ব্যাটিং ইনিংসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের জুটি।
দুজন মিলে স্কোরবোর্ডে যোগ করেছেন ৪৫ রান। স্পিনার নাসুমও সুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন ব্যক্তিগত ফিফটির দিকে। তবে অর্ধশতক থেকে ৬ রান দূরে থাকতেই প্রসিধ কৃষ্ণার বলে বোল্ড হয়ে ফিরতে হয় তাকে। নাসুম ফেরার পর শেষ পর্যন্ত শেখ মেহেদীর ২৩ বলে ২৯ এবং অভিষিক্ত পেসার তানজীম সাকিবের ৮ বলে ১৪ রানের সুবাদে শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৬৫ রানে থামে বাংলাদেশ। ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নিয়েছেন শার্দুল ঠাকুর।